
আসগর সাহেবের কৌতূহলটা একটু বেশি। এর ঘরের জানালায় উঁকি মারেন; ওর বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাস্তায় পথচলতি মানুষ দেখলেই চুপিচুপি পিছু নেন। যা বলে শুনবেন। এ রকম মানুষের জীবন সুখের হওয়ার কথা না। আসগর সাহেবের জীবন কিন্তু তবু সুখের। কেউ আসলে তাঁকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না। তাছাড়া দেখা গেছে আসগর সাহেবের শুনেই তৃপ্তি। তিনি
আসগর সাহেবের কৌতূহলটা একটু বেশি। এর ঘরের জানালায় উঁকি মারেন; ওর বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাস্তায় পথচলতি মানুষ দেখলেই চুপিচুপি পিছু নেন। যা বলে শুনবেন।
এ রকম মানুষের জীবন সুখের হওয়ার কথা না। আসগর সাহেবের জীবন কিন্তু তবু সুখের। কেউ আসলে তাঁকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না। তাছাড়া দেখা গেছে আসগর সাহেবের শুনেই তৃপ্তি। তিনি এর কথা ওর কাছে লাগান না। কারো লজ্জার কথা ফেরি করায় কোনো আগ্রহ নেই বলে কেউ তাঁকে শত্রুপক্ষ মনে করে না। সত্যি বললে আবার এখানেই একটু সমস্যা। শত্রু যে নেই, কেউ যে তাঁকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করে না, এটাকে বড় একটা অভাব মনে হয় তাঁর। শত্রুপক্ষ-বিরোধী লোক এরা আসলে মানুষকে সময় কাটানোর বন্দোবস্ত করে দেয়। আসগর সাহেবের সময় তাই কাটতে চায় না। অতএব একটাই কাজ তাঁর। অন্যের গোপন কথা শোনা।
এখন ভরদুপুর। তাঁর বয়স বাষট্টি, এই বয়সে দুপুরের ঘুমটা জম্পেশই হওয়ার কথা। কিন্তু আসগর সাহেবের ঘুম আসে না। আজ কারো কোনো গোপন কথা শোনা হয়নি বলে পেটটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে ওঠে।
সবচেয়ে কাছে শিকদার সাহেবের বাসা। বাসার পেছনে বাগানের মতো জায়গায় আড়িপাতার একেবারে সুবন্দোবস্ত। দাঁড়ালেই ভেতরের কথাগুলো স্পষ্ট শোনা যায়।
শুনলেন, শিকদার সাহেব বলছেন, ‘হার্ট অ্যাটাকই ভালো। হুট করে হয়ে যায়।’
স্ত্রী বললেন, ‘স্ট্রোক আরো ভালো। শুনতেও ভালো লাগে।’
‘স্ট্রোক শুনতে ভালো কোথায়? তাছাড়া একটা মাত্র শব্দ হলেও একেবারে অ্যাটম বোমার মতো ভয়ঙ্কর শক্তি এর।’